পবিত্র ঈদুল আযহাকে শান্তিপূর্ণ ও নির্বিঘ্ন করতে সিলেটে চার ধাপে নিরাপত্তা দেবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। ঈদের আগে, ঈদের দিন এবং ঈদের পরের দিনকে ঘিরে করা হয়েছে নিরাপত্তা পরিকল্পনা। আর তা বাস্তবায়নে কর্মকর্তা পর্যায়ে পুলিশের ঈদের ছুটি সীমিত করা হয়েছে।
অপ্রীতিকর ঘটনা, ছিনতাই, চাঁদাবাজি এড়াতে মহানগরী ও জেলার উপজেলা সদরগুলোতে র্যাব-পুলিশের প্রায় তিন হাজারের বেশি সদস্য নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, নিরাপত্তায় পোশাকে-সাদা পোশাকে পুলিশ, জেলা ও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ(ডিবি ও সিটিএসবি) সমন্বয়ে গঠিত টিম নিরাপত্তায় কাজ করে যাবে। মাঠে থাকবে র্যাবের টইল দলও।
বিশেষ করে সিলেটের স্থায়ী-অস্থায়ী পশুর হাটগুলো, ব্যাংক, এটিএম বুথ, মার্কেট-বিপণী বিতানে বাড়তি নিরাপত্তা রেখে ছক সাজানো হয়েছে।
এছাড়াও, ঈদের আগে ছিনতাই, অজ্ঞান পার্টির খপ্পর থেকে মানুষকে বাঁচাতে, জালনোট কারবারিদের প্রতিহত করতে, গাড়ি যোগে কোরবানির গরু নিয়ে আসা ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা, সড়কে-মহাসড়কে বিশৃঙ্খলা দূরীকরণে, ঈদের দিন ঈদ জামায়াতের নিরাপত্তা এবং ঈদের পরের তিনদিন ফাঁকা নগরীর বাসা-বাড়িতে চুরি-ডাকাতি, চামড়া পাচাররোধ রোধ ছাড়াও পর্যটকদের নিরাপত্তায় থাকছে পোষাকে-সাদা পোষাকে প্রায় ৩ সহস্রাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
সেই সঙ্গে ঈদের দিন বড় জামাতগুলো, যেখানে বিশিষ্টজনেরা ঈদের নামাজ আদায় করবেন, সেসব স্থান: শাহী ঈদগাহ ও হযরত শাহজালাল (র.) মাজার, শাহপরান (র.) মাজার, আলীয়া মাদরাসা ময়দান, কালেক্টরেট ভবন এলাকায় ঘিরে থাকবে অধিকাংশ নিরাপত্তা বলয়। পাশাপাশি অন্য ঈদগাহ ও মসজিদগুলোতেও পুলিশ মোতায়েন রাখা হবে।
কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ছিনতাই, চাঁদাবাজি প্রতিরোধে মাঠে ছদ্ধবেশে রয়েছে নারী পুলিশও। অজ্ঞাত পার্টির তৎপরতা রোদে হাটে চা দোকান বসানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বাস স্ট্যান্ড ও ট্রেন স্টেশনে চলছে বাড়তি তৎপরতা। জালনোট প্রতিহতে বাজারগুলোতে জান নোট শনাক্তকরণ মেশিন বসানো হয়েছে।
এছাড়া ঈদের প্রতিটা বড় জামাতে মাইন ডিটেক্টর ছাড়াও মেটাল ডোর দিয়ে প্রবেশ করানো হবে মুসল্লিদের। সেই সঙ্গে বাইনোকোলারে দৃষ্টিসীমা পর্যবেক্ষণে রাখা ছাড়াও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমেও পর্যবেক্ষণ করা হবে সার্বিক পরিস্থিতি। ঈদের দিন বিনোদন কেন্দ্রের বাড়তি নিরাপত্তা দেবে পুলিশ।
সিলেট নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (মিডিয়া) বিএম আশরাফ উল্লাহ তাহের বাংলানিউজকে বলেন, পবিত্র ঈদুল আজহায় পোষাকে-সাদা পোশাকে ২ হাজার ২শ’ পুলিশ মোতায়েন করে ৪ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা হয়েছে। এরমধ্যে নগরের ৬টিসহ মেট্টোপলিটন এলাকায় ১২টি স্থায়ী-অস্থায়ী হাট, মার্কেট-বিপণী বিতান, পরিবহণে অজ্ঞান পার্টির খপ্পড় থেকে মানুষে সুরক্ষায়, পথে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই রোধে পুলিশ কাজ করবে। পাশাপাশি ঈদগাহগুলোতে থাকছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব সদস্যরাও টহলে থাকবে।
সিলেট জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি এন্ড মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বলেন, ঈদে সিলেট জেলার ১৩ উপজেলায় অন্তত অর্ধশতাধিক পশুর হাটে গরু ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা দেওয়া হচ্ছে। যাতে কেউ অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে না পড়েন। বাজারগুলোতে জাল নোট শনাক্তে মেশিন বসানো হয়েছে। ঈদের দিন নিরাপত্তায় ঈদ জামাত কেন্দ্রিক নিরাপত্তা এবং ঈদের পরে সিলেটে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তায় ট্যুরিস্ট পুলিশের পাশাপাশি জেলা পুলিশও কাজ করবে।
তিনি বলেন, ঈদে নিরাপত্তায় অন্তত সাড়ে ৮ শতাধিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে সিলেটে। প্রতি থানায় ৩টি করে মোবাইল টিম থাকবে। এছাড়া ট্রাফিক ডিউটি থাকছে ৩৭টি স্পটে।